পাট: সেনালি ফাইবার ভূমিকা: পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। এটি এক ধরনের উদ্ভিদের ছাল। বিশ্বের ighty২ শতাংশ পাট বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। পাট উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় এ দেশে প্রচুর পাট উৎপন্ন হয়। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাটের ভূমিকা অপরিসীম। সেনালি ফাইবার: পাটকে সেনালি ফাইবার বলা হয়। কারণ বাংলাদেশ পাট ও পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। করে। পাট আঁশ আমাদের কাছে সায়ানালি চুলের মতোই মূল্যবান, সায়ানালির মতে। আকৃতি: লাঠি অনুযায়ী পাট সরু এবং সরু এবং চার থেকে আট হাত লম্বা হয়। কাঁচা পাট সবুজ রঙের। পাট গাছের ছালকে বলা হয় পাট এবং ভেতরের অংশকে বলা হয় পাটের কাঠি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে পাট গাছে কোন ডালপালা নেই। মাথায় মাত্র কয়েকটি পাতা আছে। উৎপত্তিস্থল: নিচু এলাকায় পাট খুব ভালো জন্মে। সেজন্য যে দেশে কম জমি আছে সে দেশে পাট ভালো। বাংলাদেশকে নদীমাতৃক বলা হয় এবং এর জমি বেশ কম। এজন্য এখানে অনেক ভালো মানের পাট জন্মে। কিছু পাট ভারতের আসাম, বিহার, ওড়িশা এবং মাদ্রাজে জন্মে। বর্তমানে আমেরিকা ও মিশরের কিছু এলাকায় পাট চাষ করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় পাট জন্মে। তবে ময়মনসিংহ, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, Dhakaাকা, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, ফরিদপুর, পাবনা, রংপুর ও রাজশাহী জেলায় পাট বেশি জন্মে। বাংলাদেশে প্রায় ষাট লক্ষ বিঘা জমিতে পাট চাষ করা হয়। প্রকার: পাট তিন প্রকার। যথা: দেশী, তেশা এবং মেস্তা। দেশি পাটের আঁশ সাদা। টেসার পাটের তন্তু লালচে এবং অপেক্ষাকৃত লম্বা। মেস্তা পাটের আঁশ তুলনামূলকভাবে ম্যাট। এই তিন জাতের পাট বাংলাদেশে জন্মে। চাষের সময়: সাধারণত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে পাট চাষের সময়। জমিতে ভালো বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পাটের বীজ বপন করা হয় এবং শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে পাট কাটা হয়। দেশের যে কোনো স্থানে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে আশার মাসে পাট কাটা হয়, অন্যথায় পাটের গাছ ডুবে মারা যায়। চাষ পদ্ধতি: পাট চাষ করা খুবই কঠিন। প্রথমে পাটের জমি সঠিকভাবে চাষ করতে হবে। যাতে পাট সহজেই অঙ্কুরিত হতে পারে। জমি প্রস্তুত হলে পরিমিত সার ব্যবহার করে পাটের বীজ বপন করতে হয়। পাটের বীজ থেকে চারা বের হয়। গাছ একটু বড় হলে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে, এবং গাছগুলো ঘন হলে কিছু গাছ সরিয়ে হালকা করতে হবে সময়ে সময়ে, যাতে গাছগুলি সহজেই উপড়ে ফেলা যায় এবং বড় করা যায়। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে গাছ পরিপূর্ণতা লাভ করে। এ সময় পাট গাছটি কেটে বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে দিতে হয়। পঁচিশ দিন পর গাছপালা পচে যায় এবং নরম হয়ে যায়। তারপর পাট কাঠি থেকে তন্তু সরানো হয়, পানিতে ভালভাবে ধুয়ে নদীতে শুকানো হয়। শুকানোকে পাট বলে। তন্তুগুলো গিঁটে বেঁধে ঘরে সাজিয়ে রাখা হয় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিক্রি করা হয়। বিদেশে পাট রপ্তানি করে সরকার প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। দেশের সমগ্র বৈদেশিক মুদ্রার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে পাট থেকে। পাট জ্বালানি এবং গ্রামাঞ্চলে ঘরের বেড়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। হার্ডবোর্ড, কাগজ ইত্যাদি এখন পাট থেকে তৈরি। পাটের বীজ থেকে কীটনাশক তৈরি করা হয়। পাট পাতা শুকনো পানিতে ভিজিয়ে এবং এর পানি পান করলে পেট ব্যথা, কৃমি ইত্যাদি সারে। পাট শিল্প: বাংলাদেশে প্রায় big টি বড় এবং 6 টি পাট কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের কাছে আদমজী জুট মিল যা এশিয়ার বৃহত্তম। তবে বর্তমানে জুট মিল বন্ধ রয়েছে। .এছাড়া লতিফ বাওয়ানি, করিম জুট মিল, ইস্পাহানি, ক্রিসেন্ট, চট্টগ্রামে আমিন পাট, খুলনায় পিপলস এবং ক্রিসেন্ট মিল বিখ্যাত। পাট চাষে সমস্যা: পাট চাষ লাভজনক হলেও এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিশ্রম। একইভাবে, এর চাষের খরচও বেশি। বাংলাদেশের দরিদ্র কৃষকরা প্রায়ই তহবিলের অভাবে নিয়মিতভাবে পাট চাষ করতে পারেন। সঠিক সময়ে জমি সার না হলে পাট ভালো হয় না। অসুবিধা: পাট চাষ কৃষকদের কিছু শারীরিক ক্ষতিও করে। পাটের পচা পানি দূষিত এবং এতে মশা জন্মে। মশার কামড় এবং পচা পানির কারণে গ্রামের মানুষ ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি পায়। উপসংহার: পাট বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য। পাঠ রপ্তানি করে কোটি কোটি টাকা আয় করা হলেও দরিদ্র কৃষকদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। কারণ কৃষকরা অসাধু ব্যবসায়ীদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। অনেক মানুষ ভারী পানিতে সরকারের কাছে পাটের পানি বিক্রি করে - এর ফলে পাট পচে যায় এবং গুণগত মান কমে যায়। ফলে বিদেশীরা পাট কিনতে রাজি হয় না। তাই পাট চাষ করে অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য দেশের সরকার, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সতর্ক থাকতে হবে।
إرسال تعليق