রচনা নৈতিকতা এবং দেশপ্রেমের মূল্যবোধ বা দেশপ্রেম এবং বিশ্বপ্রেম বা জাতীয় জীবনে দেশপ্রেমের গুরুত্ব

 ভূমিকা: মানুষ, প্রকৃতি, প্রাণী এমনকি জন্মভূমির ধুলোও দেশপ্রেমিকদের কাছে প্রিয় এবং পবিত্র। এই প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন- 'যখন Godশ্বরের প্রতি ভক্তি এবং সকলের প্রতি ভালোবাসা এক হয়, তখন বলা যেতে পারে যে Godশ্বরের প্রতি ভক্তি দেশপ্রেম ছাড়া সবচেয়ে গুরুতর ধর্ম। যে সব শিশুরা সেই সবুজ স্নেহে লালিত -পালিত হয় তাদের যদি সেই দেশের প্রতি সহানুভূতিশীল আনুগত্য না থাকে যা তাদের শান্তি, বায়ু, খাদ্য, জল এবং বস্ত্র প্রদান করে, তাহলে তারা কেবল অকৃতজ্ঞই নয়, তারা সব জঘন্যে বিশেষায়িতবিশ্বের বিশেষণ।দেশপ্রেমের অনুভূতি এবং চেতনা: যে ভূমিতে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি তা আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। আমরা আমাদের মাতৃভূমির বাতাসে লালিত -পালিত। আমাদের চেতনা দেশের মানুষের চেতনার সাথে জড়িত। আমাদের ভাষা-চেতনা দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মাঝে গড়ে উঠেছে। তিনি মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগ, নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধায় অভিভূত হয়েছিলেন। আমাদের হৃদয়-মন। এভাবেই আমাদের হৃদয়ে দেশপ্রেমের আবেগ অনুরণিত হয়। সেই আবেগের সাথে আমরা গেয়েছিলাম, 'চিরকাল তোমার স্বর্গীয় বাতাস আমার আত্মায় বাঁশি বাজায়। দেশপ্রেমের মূলে বৃহত্তর এবং সামগ্রিক ব্যক্তিগত স্বার্থ তুচ্ছ হয়ে ওঠে। .সামগ্রিকভাবে জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় অগ্রগতি এবং দেশের কল্যাণ আমাদের চিন্তা ও কর্মের প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। অন্ধ দেশপ্রেমের পরিণতি: দেশপ্রেম দেশ ও জাতির গর্ব। কিন্তু অন্ধ দেশপ্রেমে ভয়ঙ্কর রূপ রয়েছে। অন্ধ দেশপ্রেম জাতির মধ্যে তেল এবং সংঘাত অনিবার্য করে তোলে। আমরা যদি আমাদের মাতৃভূমির প্রশংসা গাইতে গিয়ে অন্যের দেশপ্রেমকে আঘাত করি, তাহলে বৃহত্তর দেশপ্রেম যদি বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘাত নিয়ে আসে। হিটলারের জার্মান বা মুসোলিনির ইতালি উগ্র জাতীয়তাবাদের নগ্ন মুখ। দেশপ্রেম ও রাজনীতি: আসলে রাজনীতিবিদদের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো দেশপ্রেম। রাজনীতির পাঠ দেশপ্রেমের পবিত্র বেদীর গোড়ায়। একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ দেশের একজন সজাগ প্রহরী। ।পরাধীন বাংলাদেশের দিকে গঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অধিকাংশের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করা। তাদের অবদানের জন্য ধন্যবাদ, আমাদের দেশ আজ স্বাধীন। .দেশপ্রেম এবং মহাজাগতিকতা: প্রকৃত দেশপ্রেম এবং বিশ্বজনীনতার মধ্যে কোন অসঙ্গতি বা দ্বন্দ্ব নেই। দেশপ্রেম বিশ্ব ভালবাসার অংশ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের peopleর্ধ্বে মানুষ শুধুমাত্র জাতীয় জীবনে বিশ্বজনীনতার এই বার্তা গ্রহণ করলেই তারা সংকীর্ণ অন্ধ জাতীয়তাবাদ থেকে মুক্তি পাবে। বিশ্বপ্রেমের উজ্জ্বল আলোয় দেশপ্রেম প্রকাশ পাবে। আমরা আমাদের দেশকে ভালবাসি এবং মহাবিশ্বের পূজা করি। আজ যখন সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের জোয়ার বইছে, তা সঠিকভাবে মেনে নেওয়ার দায়িত্ব বিশ্বের নাগরিকদের। .স্বদেশ চেতনা বিশ্বায়নের প্রাথমিক শর্ত। যদি আপনি আপনার দেশের জল-মাটি-বন-পশু-মানুষ-সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে পারেন। পৃথিবীর মানুষ ও প্রকৃতিকে ভালোবাসাও সম্ভব। তবেই তার মধ্যে বিশ্বজনীনতার জন্ম হবে। উপসংহার: দেশপ্রেম আমাদের মনে একটি জ্বলন্ত শিখা। আমাদের হৃদয় যে সমস্ত পাপী, যা ক্ষুদ্র, নোংরা তার সমস্ত আত্মত্যাগ দ্বারা আমাদের জীবন শুদ্ধ হয়। মানুষ একটি মহান চেতনার ভয়ে জন্মগ্রহণ করে। ভাস্বর। যদি মানুষের জীবনে দেশপ্রেমের অনুভূতি না থাকে, কল্যাণ কুৎসিততায় আচ্ছন্ন থাকে, তাহলে মানুষ তার হৃদয়ের কোণে সম্পদ দিয়ে মহান হবে? দেশপ্রেম কেবল একটি প্রাণহীন বাক্যাংশ নয়, এটি কেবল একটি বিমূর্ত আদর্শ। .দেশপ্রেমের মধ্যে রয়েছে মানবতার উদ্বোধন, একটি মহান জীবনের সংকল্প এবং বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। ""।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন